A line snaking all the way to the main gate of Jogesh Mime Academy and then of course, a hall packed almost to the rafters. What an exhilarating sight. We started ‘Naxalbarir 50’, the monthly screening for May with an introduction by Dwaipayan.

Eleven Adivasi peasant protestors, women and children, became martyrs, on 25 May, half a century ago. They were felled by police firing in Byangaijote, Naxalbari. On 19 May, nearly 400 people came together to reflect on the events then and their legacy now.
Music has an extraordinary power. It can shape movements. It can unite. It can compel. Many songs from the roots of the Naxalbari uprising were created by the rebels themselves, weaving in what they knew and felt, with the rhythm of the land and the soil—which is what they were fighting for. After a short video of Ajit Pandey, who sang Tarai Kande Go (The Terai Cries), Bipul and Anushree Chakrabarti began the program with five songs—that they had selected from hundreds of songs that came from the movement. Bipul da spoke of how the movement was not just a krishak andolan but one that shaped India’s political outlook in more ways than one. Their renditions of songs by Santanu Ghosh, Kamal Sarkar, Suresh Biswas, Dilip Bagchi and Sagar Chakraborty amongst others were powerful. Moving. They ended with the power-packed Ei Kada Payer Chhap from their own oeuvre.
Many songs that came from the grassroots have been lost, fading away from public memory. The next segment focused on these songs, beginning with a field-recorded video of Shirril Oraon singing Naxalbari teo Krantikari sitting next to his mud house in Naxalbari. Rongili Biswas, accompanied by her group, sang a few of these songs (by Sukra Oraon, Hemango Biswas, Kalu Singh, Meghnad), explaining the use of rhythm and notes in each. She spoke of the music that was used in Utpal Dutt’s Teer and interspersed the songs with readings from Hemango Biswas’s observations and writings.
Following this, S.D. : Saroj Dutta and His Times, directed by Kasturi and Mitali was screened. This was the second time the film was screened in the city, the first time being at the annual Kolkata People’s Film Festival this year. The film traces not only the life of journalist, poet and revolutionary, comrade Saroj Dutta, and through that tells a story about the warp and the weft of the communist movement in India. It uses interviews, archival matter, archival sound recordings, extensive research and re- enactments to tell the story of an extraordinary man who used the power of language to critique the Left movement from within and speak out in support of the peasants whose armed struggle for their own land is the crux of the Naxalbari movement.
Dutta’s story began as a journalist and columnist with the Amrita Bazar Patrika. He supported his wife Bela’s involvement in the Tebhaga andolan, only later joining the Party himself. After leaving the Patrika, he wrote hard-hitting editorials for Swadhinata, translating important works such as Patrice Lumumba’s Dawn in the Heart of Africa. Even when in the undivided Communist Party, he was critical of many aspects of the Party and was jailed during Indo-china war in 1962. After the CPI split on the question of nationalism, Dutta joined the newly formed CPI (Marxist) and began writing under the pseudonym Shashanka for Desh-Hitoishi, and subsequently (after the second-split in the CPI (M)) Deshabrati; his words fierce, unafraid and unapologetic. He was critical of the way Inspector Sonam Wangdi’s death—which spurred widespread police atrocities, including the Byangaijote killings—was represented in the news and the way the Naxal movement was written about in the bourgeois dailies. Dutta was one of the key members of the All India Coordination Committee of Communist Revolutionaries that formed the Communist Party of India (Marxist-Leninist) in 1969.
Saroj Dutta was disappeared by the police in 1971. He was taken from professor Debiprasad Chattopadhyay’s home, where he was in hiding and murdered in the Kolkata maidan.
State records still say that he is ‘missing’.
The screening of the film was followed by a brief discussion with the team that made the film and the audience. One of the members of the audience commented that Uttam Kumar’s role— largely glossed over and now forgotten— in being an eyewitness to Saroj Dutta’s killing in the Kolkata Maidan before dawnbreak on 5th August 1971 and the superstar’s subsequent deafening silence to come out with his testimony, should have been referenced, given the fact that the actor is so widely idolized. A few others also had a few suggestions that they shared with the film makers and producers.
While the audience was filing out, I overheard many of them discussing the importance of bringing the life and the role Saroj Dutta played, as a writer and revolutionary, into light. One of them said, ‘it is important for this (younger) generation to know the realities of what had taken place’. One of the reasons why the film was made, as Kasturi said, was to bring these incidents and the history back into the mainstream discourse.
Given the fact that the Naxal movement and the lives of revolutionaries is taught (if at all) in a very incomplete and biased manner in most schools and possibly not talked about at all amongst school going students, I personally believe that this would definitely spur a discussion. A discussion that is urgently and immediately needed given the number of State atrocities that we hear about on a daily basis.
Conversations continued outside, people milling around the ever busy book stall. Even today, a few days after the screening, people are writing in with their thoughts, impressions, memories, and most importantly perhaps, emotions.
Songs speaking of a people’s movement, of tears and courage, of the right to one’s own land. A film that interweaves the story of one man’s life with that of the movement he wrote so eloquently about. State atrocities that are never acknowledged in the public domain. Fifty years have passed. Let these stories continue to be told and sung. For more than another fifty years.
Report: Paroma
Photographs: Kunal Chakraborty and Aniruddha Dey
কবিতা বেহল ও নন্দন সাক্সেনার ‘কটন ফর মাই শ্রাউড’ ছবিটা তৈরি হয়েছিল ২০০৬ সালে। মহারাষ্ট্রের তুলো চাষীদের আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে গিয়ে বিদর্ভের গ্রামগুলো ঘুরে ছবিটা বুঝতে চেয়েছিল মনসান্টো সংস্থা-সরকারের মধ্যেকার জোট ও কৃষকদের ওপর তাদের অন্তহীন শোষণকে। ছবিটা যদিও শুধুমাত্র বিদর্ভের তুলো চাষীদের গল্প না হয়ে সারা দেশের চাষীদের বারোমাস্যা হয়ে উঠেছে। গত শনিবার, ২১ শে এপ্রিল, যোগেশ মাইম একাডেমিতে, পিপল্‌স ফিল্ম কালেকটিভ আয়োজিত অনুষ্ঠানে, এই ছবিটা ছাড়াও দেখানো হল ম্যাথু রায়ের তৈরি নতুন ছবি ‘ডিজপজেসড’। দুই ছবির মাঝখানে আলোচনায় ছিলেন অর্থনীতির শিক্ষক-গবেষক শুভনীল চৌধুরী ও প্রাকৃতিক কৃষক অপরাজিতা সেনগুপ্ত।
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর বিজেপি সরকারের গুলি চালিয়ে হত্যার এক বছরের মধ্যেই মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ইত্যাদি অঞ্চলে কৃষকদের ব্যাপক সাড়া জাগানো গণআন্দোলন কৃষি সংকট ও কৃষকদের সমস্যাকে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে। যে কর্পোরেট মিডিয়া হাউসগুলো সাধারণতঃ কৃষকদের সমস্যাকে ভুলে ও ভুলিয়ে থাকে তারাও বাধ্য হয়েছিল মহারাষ্ট্রের লং মার্চ নিয়ে খবর করতে। যদিও এখন তারা এই প্রসঙ্গটি ভুলে দ্রুতই অন্য প্রসঙ্গে চলে গেছে, কারণ আমাদের কর্পোরেট মালিকানার মিডিয়ার স্বাভাবিক ধর্মই হল সমস্ত মৌলিক কাঠামোগত সমস্যাকে ভুলিয়ে কেবল প্রসঙ্গ পাল্টাতে পাল্টাতে মৌলিক বিষয়গুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে যাওয়া। এখনও অবধি রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রের আন্দোলনরত কৃষকদের ভাগ্যে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জোটেনি। তাই আন্দোলন জারি আছে। কিন্তু, যে দেশে প্রতি আধ ঘন্টায় একজন কৃষিজীবি আত্মহত্যা করেন সেখানে এই ঘুরে দাঁড়ানোটাও বড়ো খবর। আশার খবর।
ছবি দু’টো থেকে এবং সঙ্গের আলোচনা থেকে কৃষি সংকটের যে চিত্র উঠে এলো তা যদিও ততটা আশার নয়। আমাদের দেশে সবুজ ‘বিপ্লব’ পরবর্তী সময়ে দ্রুত ফলন বাড়ানোর নাম করে যে নিদান দেওয়া হয়েছিল তা শুধু জমির উর্বরতাকে দীর্ঘমেয়াদী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তা-ই নয়, বীজ-সার-সেচ-বাজারের ওপর থেকে কৃষকের নিয়ন্ত্রণকে সম্পূর্ণ কেড়ে নিয়েছে। যেহেতু এই কেড়ে নেওয়াটা জমি উচ্ছেদের মতো সরাসরি নয় তাই এটা হয়ত বা আরও খতরনাক। জমি উচ্ছেদের ফলে যে মানবিক মূল্য দিতে হয়, তা আমরা দেখতে পাই। বুঝতে পারি। অনেক ক্ষেত্রেই কারখানা-খনির জন্য জমি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন রক্তক্ষয়ী হয়েছে। সরকার বদলেছে জোর করে জমি দখল করতে গিয়ে। কিন্তু, কৃষি সম্পদ, কৃষি উপকরণের ওপর কৃষকের নিয়ন্ত্রণকে হটিয়ে বাজারের নিয়ন্ত্রণ কায়েম যেহেতু বাজারের নিয়ম মেনে – অর্থাৎ ‘ফ্রি মার্কেটে’ ‘ফ্রি চয়েস’ দেওয়ার নিয়ম মেনেই হয়েছে তাই আমরা যারা কৃষিপণ্যের ক্রেতা হিসেবে দূর থেকে কৃষি সমস্যাকে বুঝি তারা শুধু শুনে গেছি প্রত্যেক আধঘন্টায় দেশে একজন কৃষক আত্মহত্যা করেন, কিন্তু এই লুঠের রাজনীতি-অর্থনীতিকে তলিয়ে বুঝতে বা প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করিনি।
‘ডিসপজেসড’ ছবিতে পি-সাইনাথের এক সাক্ষাৎকারে উনি বলেন যে সমস্ত ধর্মের মতো নব-উদারবাদও এক ধর্ম। সে আরও দশটা ধর্মেরও বাপ। যার আছে নিজস্ব পোপ ও পূজারী। আছে অসংখ্য টেলি-এভাঞ্জেলিস্ট। যারা প্রত্যেক সন্ধ্যেবেলায় টিভি স্টুডিওয় বসে পড়েন তাদের বাণী দিতে। এই ধর্মের আছে নিজস্ব গসপেল। বাজারের এই অন্তহীন যাত্রা যা আমাদের ভুলিয়ে দিতে পেরেছে এই নতুন ধরণের কর্পোরেট-নিয়ন্ত্রিত কৃষিব্যবস্থা কেবলমাত্র কৃষকদের জন্য ক্ষতি আর লোকসান বয়ে নিয়ে আসছে তাই নয়, তা মাটির ঊর্বরতাকে, জলস্তরকে, বীজের বৈচিত্র্যকে, আমাদের দেশ তথা সারা বিশ্বের দরিদ্রতম মানুষদের খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্য-সুরক্ষাকে স্থায়ীভাবে বিপন্ন বা নিকেশ করে দিচ্ছে; যার ফলে বিশ্বের কৃষি-কর্পোরেটগুলি এখন হামলে পড়ছে আফ্রিকার মাটির দখল নিতে। যেখানে মাটির উপরিভাগ বা টপ-সয়েল এখনো অপেক্ষাকৃতভাবে ঊর্বর।
ভারতের মতো দেশে যেখানে কোনো দিনই ভূমি সংস্কার সম্পূর্ণ হয় নি, সেখানে কৃষি উপকরণ ও বাজারের ওপর দেশি-বিদেশী কর্পোরেশনগুলোর সর্বগ্রাসী নিয়ন্ত্রণের ফল হয়েছে ছোটো কৃষকদের ওপর এক অদৃশ্য মারণ-জোয়াল চাপিয়ে দেওয়া। ভূমি সংস্কারের উলটো পথে যাত্রা। কিন্তু, একদিকে ছোটো ও মাঝারি কৃষকের উপস্থিতি ও উপকরণ ও বাজারের ওপর পুঁজির নিয়ন্ত্রণ ভারতের কৃষকদের সমস্যাকে জটিল করে তুলেছে। অন্যদিকে জৈব চাষের পরিসরেও কর্পোরেটরা ঢুকে পড়েছে। কোম্পানিরা জৈব সার বিক্রি করছে। যার মূল মন্ত্র হলো সাধারণ গরীব শ্রমজীবি মানুষদের জন্য বিষযুক্ত চাষ আর গুটিকয়েক অসাধারণ মানুষদের জন্য সতেজ ‘অরগ্যানিক’ সবজি ও শষ্য। এও এক শ্রেণী বিভাজনের রাজনীতি। অথচ প্রাকৃতিক কৃষি-পদ্ধতির মাধ্যমে, ভূমি সংস্কার সম্পূর্ণ করা ও কো-অপারেটিভ চাষের মাধ্যমে, কৃষিতে সরকারি সাবসিডি বৃদ্ধির মাধ্যমে, সার-বীজ-সেচ-বিদ্যুৎ-ব্যাঙ্কলোন-কোল্ডস্টোরেজ-বাজার-কৃষিপণ্যের দাম সমস্তটার ওপর কৃষকের সমবেত নিয়ন্ত্রণ ও দরাদরির ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য যে কৃষিব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো দরকার সে কথা মানুষকে জানতে বা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর বিপ্রতীপে, প্রাকৃতিক চাষ সম্পর্কে সচেতনতা ও এই চাষের নিজস্ব বাজার তৈরি জন্য তাই স্বেচ্ছাশ্রমের প্রসঙ্গ উঠে আসলো আলোচনায়। শহরের মানুষের খাদ্যের যোগানের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হিসেবে শহরের বর্জ্যের প্রাকৃতিক উপাদানকে বিষমুক্ত অবস্থায় মাটিতে ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজন নিয়ে কথা এল। শহরের চাষ প্রসঙ্গে হাভানার মডেল ও বিকল্প বাজারের প্রসঙ্গে আমেরিকার ফার্মার্স মার্কেট আন্দোলনের প্রসঙ্গ এল। কিউবা-র কৃষি মডেলের পাশাপাশি উঠে এল মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস-ফিউচার ট্রেডিং-এর রাজনীতি-অর্থনীতি নিয়ে কথাবার্তা।
কৃষকদের লড়াই চলবে। কৃষিব্যবস্থাকে বদলানোর লড়াই চলবে। কারণ, সব অর্থেই এ লড়াই বাঁচার লড়াই। এবং, এ লড়াই সবার লড়াই।
The right to self-determination. A phrase that is bandied about fairly regularly. One that is now immediately associated with violence, loss of life and the grand old web of occupational politics. When one breaks down the phrase into its component words, none of them actually exist. Who really has the right to self-determination? Whether it is a state, constantly in turmoil, or at a smaller but equally powerful level, an individual who wants to exercise free choice—in terms of gender . . .who really has the right?
Women’s Day is replete with advertisements, memes and WhatsApp forwards. Gimmicks that are both mocked and acknowledged. But where do we really place when it comes to the rights of not just women, but people all over the world who are looking for that elusive right to self-determination?
‘For Bread and Roses’, the monthly screening organised by the Peoples Film Collective on the occasion of International Working Women’s Day, saw two films—told from two very different, yet similar perspectives, both on the subject of rights.
The first film Doud (The Frontrunner), directed by Debalina and Payoshni Mitra is a documentary on the life and struggles of athlete Pinki Pramanik. It takes us through the events in her life and how her rights as an individual and athlete were taken away from her by a false accusation of her having raped an woman, and the archaic gender determination ‘laws’ that were laid out by sporting bodies. Laws—that as Payoshni Mitra says and rightly so— are regressive. Pinki, who currently works with the Eastern Railways and has returned to the world of sports, spoke about how it was nice to watch the film after three long years, in the discussion after the screening. When asked about the reactions to her return to athletics in her village and in the city, she mentioned that while the reactions were not so tangible in the village, her supporters in the city were very happy.
Activist Anindya Hajra spoke next, connecting the transgender movement to the Working Women’s Day. As opposed to putting transgender and working women’s movements in separate boxes, Anindya spoke about transgender rights essentially being part of the rights of the working class and, for many, rights of working women. Anindya reminded the audience about the history of transgender workers in Bengal’s jute mills, about present-day transgender workers in various factories and industrial sectors and how that aspect is usually not brought into the public discourse or in working class or labour movement discourse. Anindya spoke extensively about the right to choose ones gender identity and how it is wrong to define a person by gender. Speaking about the changes in the National Legal Services Authority (NALSA) agreement of 2014, Anindya mentioned that the drafts, which are not being made public, show that gender is being defined through a highly ‘medical’ process. This completely takes away the right given to people who do not identify with the male-female binary to determine their own gender. While some Universities in India do now have the space (in admission forms and so on) for people to identify as ‘other’, as one of the audience members asked, they still don’t feature in the prevention of sexual harassment guidelines when it comes to actual protection.
Nirnay, directed by Pushpa Rawat and Anupama Srinivasan traces the lives of lower middle class and working class women in small industrial towns in India and their struggle as individuals, in terms of love, relationships and taking charge of crucial decisions in life. Where do the dreams of women feature? Do they feature at all? The film interestingly intersperses candid interviews with the older generation with those of the younger generation. Where the elders speak of caste and tradition, the younger women speak of suppression. Nirnay also brings out poignantly and powerfully, the power of the camera, of the transformation of the soft-spoken and vulnerable yet resilient and stubborn Pushpa, as she confronts these basic problem facing young women, armed with a camera.
As Pinki said, if one supports individuals and their right to exercise freedom of choice, the time to speak up is now. Whether it is in the workplace, in marriage, in love or in defining one’s gender. It really is upto the person concerned. It is their inalienable right.
Report – Paroma
Photography – Aniruddha
১৪ই জুলাই, কলকাতা। নিজস্ব প্রতিবেদক।
স্বৈরাচারী শাসক ও তার অনুগামীরা প্রতিরোধের শিল্পকে ভয় পায়। সেগুলো ধ্বংস করে দিতে চায়। ইতিহাস তার সাক্ষী, বর্তমান তার সবুদ। হয়তো তার কারণ, স্বৈরাচারী ক্ষমতার বিরোধিতায় যাবতীয় আর্টফর্ম ও কলম মৃতপ্রায় বিবেকদের দংশাতে পারে। তাই সর্বশক্তি প্রয়োগে এসবকে থামিয়ে দেবার প্রাতিষ্ঠানিক চেষ্টা চলতে থাকে। গত ন’তারিখ পিপল্‌স ফিল্ম কালেকটিভের ‘ফ্রেমিং ইনোসেন্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে কে পি জয়শঙ্কর ও অঞ্জলি মন্টেরো-র ‘ফারুক ভার্সেস দ্য স্টেট’, নীতিন নীরা চন্দ্র-র ‘দ্য সাসপেক্ট’, কে পি শশী-র ‘ফ্যাব্রিকেটেড’ এই তিনটি সিনেমা দেখানো হয়। ‘সাসপেক্ট’ ছবির পরিচালক নীতিন ছবির শেষে আলোচনার জন্য উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক-সাংবাদিক মহম্মদ রিয়াজ তাঁর বক্তব্যে সারা দেশে সংখ্যালঘু, দলিত ও আদিবাসী সমাজের মানুষ কীভাবে নানান সামাজিক প্রতিক্রিয়াশীল ধারণার ফলে জেলে কাটাচ্ছেন, কীভাবে ৯/১১ পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ইসলামোফোবিয়ার ফলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন আপাত-‘নিরপেক্ষ’ মুখও প্রভাবিত হয় তা নিয়ে বলেন। বলেন সংঘ পরিবার ও তাদের প্রভাবিত রাজ্যে বিচারের নামে প্রহসনের কথা।
নীতিন নীরা চন্দ্র-র মৈথিলী ভাষার ‘দ্য সাসপেক্ট’ দিয়ে ছবিগুলির আলোচনা শুরু করা যেতে পারে। এই সিনেমাটি “দারভাঙ্গা মডিউল” নামক সন্ত্রাসবাদী ট্যাগ লাগিয়ে বিহারের দারভাঙ্গা অঞ্চলের একটি চিত্র তুলে ধরে। প্রসঙ্গত এই ছবিটি বড়পর্দায় দেখার জন্য কলকাতাবাসী মৈথিলীভাষী বহু মানুষ ওই দিন জড়ো হয়েছিলেন হলে। ফলে ধর্মীর বিভাজনের রাজনীতির পাশে পাশে আলোচনায় উঠে আসে মৈথিলীর মত ভাষার ওপর হিন্দীর টুঁটিচেপা আধিপত্যের প্রসঙ্গটিও। কাজের জন্য বড় শহরে, অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়া খুব পরিচিত একটি মানুষের মুখ নিয়ে এই সিনেমাটি। নতুন শহরে কাজ খুঁজতে এসে ২৬ বছরের আব্দুল রহিম আনসারি নিজের অজান্তেই তার চেহারা, দাড়ি, পোশাক, ফেজ টুপি, গলার তাবিজের কারণে হয়ে ওঠেন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদী। উক্ত দিনে শহরে কয়েকটি ব্লাস্টের সময় কাকতালীয় ভাবে ঐ অঞ্চলে তার নিরপরাধ উপস্থিতি নির্ধারণ করে দেয় যে সেই সন্দেহভাজন ও সন্ত্রাসবাদী। ছেলেটি অকারণে বিপন্নতাবোধ করে, আর ধর্মীয় পরিচিতি পোশাক, দাড়ি, তাবিজ সবকিছু ত্যাগ করে ফেলে বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আসল অপরাধী বাইরে থেকে যায়। আর শহরের কাছে ছেলেটি শুধু সন্দেহভাজনই হয় না, টেলিভিশনের মিডিয়া ট্রায়ালে জনসমক্ষে তাকে সন্ত্রাসবাদী বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। নীতিন নীরার এই ‘সাসপেক্টের’ সাথে এদেশে সংখ্যাগুরুর চেতনা কতটুকু একাত্ম হতে পারে; এটা গভীর প্রশ্ন হয়েই থেকে যাক। যখন আজকে সংখ্যাগুরুর হিন্দুস্থানে প্রতিটা মায়ের সন্তানের জীবনের মূল্য, অধিকার এক নয়; তাঁদের জন্য এক কানুন নয়। প্রশাসনের নজরদারি, বা শৃঙ্খলও যাদের জন্য এক নয়। একথা পরিষ্কার, ধর্মীয় মেরুকরণের বর্তমান রাজনীতির বাজারে জন্ম পরিচয়ে একই সাথে তিনটে মায়ের (গর্ভধারিণী, গোমাতা, ভারতমাতা) স্বীকৃতি যাদের আছে হয়তো তাদের মানবাধিকার এই দেশে হয়তো একটু বেশী। বাকিরা জন্মগত পরিচয়ের কারণে সারা জীবন সন্দেহভাজনের তালিকা থেকে নাম মুছতে পারে না। এ দেশে ধর্ম-পরিচয়, সত্তা লুকিয়ে রাখার অদ্ভুত প্রয়াসে কখনো কখনো যে আত্ম-সংকট তৈরি হয়ে সেটা নিয়ে কথা না বললেও কিছু যায় আসে না। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দেশের রাজনীতির যে গতিবিধি, সেখানে মুসলমান ধর্ম পরিচয়ের সাথে ‘সাসপেক্ট’-এর তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে। কেউ গারদে থাকবে বিনা বিচারে, কেউ এনকাউন্টারে মরবে, তা না হলে সপ্তাহে দুটো-চারটে করে গণপিটুনিতে; এটাই বাস্তব সত্য। সংখ্যাগুরুর চেতনাতে রোপণ করা হবে ‘সব শালা সন্ত্রাসবাদী, চর, পাকিস্তানের সাপোর্টার’। মুসলমানদের মানুষ বলে ক’টা লোক ভাবে বর্তমান এই দেশে…বিশেষ করে ‘অনির্বচনীয় হুন্ডি’ যাদের হাতে? আব্দুল রহিম বা ফারুকদের কি মানুষ ভাবা যায়? যদি মানুষ হয় তবে তাঁদের বিনা অপরাধে হাজতে পচানো, এনকাউন্টারে খেয়ালখুশি মতো খুন করার অমানবিক ঘটনাগুলো কেন ঘটতে থাকে?
কে পি জয়শঙ্কর ও অঞ্জলি মন্টেরো-র স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র ‘ফারুক ভার্সেস দ্য স্টেট’ এই প্রশ্ন নিয়ে শুরু হয়। বোম্বের হরি মসজিদে থাকা নিরস্ত্র ফারুকদের উপর পুলিশের গুলি চালনা; আবার তাদেরই বিরুদ্ধে দাঙ্গাকারী অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ জেলে রাখার পর, আদালত যখন তাকে বেকসুর খালাস করে, তখন সে আদালতে আবেদন করে দীর্ঘ বছরগুলো তাকে কি ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে? এই আবেদন শুধু কি ফারুকরা করেছিলেন? ৯ তারিখের অনুষ্ঠানে বিতরণ করা লিফলেট বলছে অতি সম্প্রতি এই আবেদন করেছিলেন মৃত্যুদন্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত এবং ১২ বছর পর বেকসুর খালাস হওয়া অক্ষরধাম ব্লাস্টের ভুঁয়ো-অভিযুক্ত যুবকরাও। আদালতে এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁদের বলা হয় যদি তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তবে পরবর্তী সময়ে খারাপ ফলাফল দেখা দেবে। সে যাক, তথ্যচিত্রে ফারুক আইনি পদ্ধতিতে লড়াই চালায় স্টেটের বিরুদ্ধে। ছবিটি দেখতে দেখতে আমার জানতে ইচ্ছে হয়েছিল খুব ফারুকের কি ভোটার কার্ড আছে? ফারুক ভোট দেয়? ফারুক কি আধার কার্ডটা করিয়েছে? আচ্ছা নির্দোষ ফারুকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার যে সনদটা আমাদের দেশে আছে, সেটার এক কপি যদি পাওয়া যায়, তবে কি কিছুটা বুঝতে সহায়ক হত? সনদের দরকার নেই, তথ্য দেখুন। প্রতিবছর যখন এই দেশ স্বাধীনতা উদ্‌যাপিত হচ্ছে মহাসমারোহে, সেখানে হাজার হাজার নির্দোষ বন্দী বিচারহীন অবস্থায় ভারতীয় জেলে রয়েছেন। এই ব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য জাতীয় নিরাপত্তার নামে রয়েছে বেশ কিছু দানবীয় আইন। ফলে তাঁরা বিচার শুরু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন বছরের পর বছর ধরে।
আবদুল নাসের মাদানির কথা শুনেছেন কি? কেরালার একজন মুসলিম ধর্মীয় নেতা। তিনি ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রচুর মানুষকে সমাবেশিত করে দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি মূলতঃ দক্ষিণ ভারতের দু’তিনটি রাজ্য জুড়ে দলিত-মুসলিম শ্রমজীবি মানুষের ঐক্যের লক্ষ্যে হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলির বিরুদ্ধে বিপুল জনসমাবেশ ও সংগঠন গঠনের পথে এগোচ্ছিলেন। তাঁর বাড়িতে আক্রমণ করা হয় এবং তাঁকেই সাড়ে নয় বছর হাজতে থাকতে হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং এমনকি রায়ও স্পষ্ট করে তোলে যে মামলাগুলো মিথ্যা সাজানো ছিল। তিনিও ফারুকের মতোই কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়া মুক্তি পান। তাঁর ওপর শারীরিক হামলা হয়। হামলায় তাঁর পা দুখানি কাটা পড়ে। অল্পের জন্য বুলেট ফস্কে প্রাণে বেঁচে যান। এই ধরনের হামলা ও মামলার জালিয়াতির জন্য যারা দায়ী ছিল তাদের উপর শাস্তি দেওয়ার বদলে মাদানির উপরেই ফের চাপানো হয় আরও গুচ্ছ গুচ্ছ কেসের ফাইল। আবার ঢুকিয়ে দেওয়া হয় জেলের অন্দরে। যা এখনো বিচারাধীন। তাঁর বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি ‘ফ্যাব্রিকেটেড’ আরও অনেকগুলি বিন্দু জুড়ে জুড়ে দেখায় যে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যেমন, মাদানির বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিক কে. শাহিনা যখন তথ্যসন্ধান করে নিউজ রিপোর্ট বের করতে শুরু করেন এবং মিথ্যে সাক্ষীদের এঁকে এঁকে উন্মোচিত করতে থাকেন তখন শাহিনা-র ওপর পর্যন্ত চাপানো হয় একের পর এক মিথ্যে মামলা। পাঠানো হয় জেলে! প্রান্তিক মানুষদের আন্দোলন, প্রতিরোধ দমনে রাষ্ট্রীয় পেশী ক্ষমতায় হিন্দু-হিন্দুস্থানি কানুন কখন কীভাবে এক হয়ে কাজ করে; এর দৃষ্টান্ত হিসাবে বেশ কয়েকজন মুসলমান, দলিত, আদিবাসী নেতৃত্ববর্গের কাছ থেকে একইরকম অভিজ্ঞতার কথা উঠে আসতে দেখা যায়। ছবিতে উত্থাপিত প্রশ্নটি হল, কেন একজন ব্যক্তি অপরাধী প্রমাণিত না হওয়াতেও এত বছর ধরে কারাগারে কাটিয়েছেন? তাঁর ওই বছরগুলো কে, কীভাবে ফিরিয়ে দেবে?
এই প্রশ্নের অনুরণন আজও বিভিন্ন প্রান্তে গুঞ্জরিত হয়। মহম্মদ রিয়াজের বক্তব্যে যেমন উঠে আসে ২৮ বছর বয়সে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়ে ১৬ বছর কারাগারে বন্দী থাকা কাশ্মীরি পিএইচডি ছাত্র গুলজার আহমেদ ওয়ানির কথা। সুপ্রিমকোর্ট তাকে নিরপরাধ আখ্যা দিলেও মেধাবী ছেলেটির ১৬ বছরের ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোন আইন বা আদালত সাহায্য করেনি। এই ছবিগুলি আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো নিয়ে মৌলিক স্তরে প্রশ্ন তোলে। বর্তমানে এই ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্য দিয়ে কীভাবে মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়; অসংখ্য নিরপরাধ মানুষদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কীভাবে একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক আবহ তৈরি করা হয়। যেখানে নির্দোষ ফারুক, গুলজার, আব্দুল, মাদানিরা ভিক্টিম হয়েও সাসপেক্ট হয়ে ওঠেন ধর্মীয় পরিচয়গত কারণে। এই অশান্ত সময়ে দাগিয়ে দেওয়ার যে রাজনীতি চলছে; সেখানে নিরপরাধ জেলবন্দীর ৬৫ শতাংশ মুসলমান, দলিত, আদিবাসীবর্গের মানুষ। তাদের মানবাধিকারের উল্লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে চীৎকারগুলো কতদূর আর কতটুকু প্রভাব বিস্তার করবে জানা নেই। যখন এ রাজ্যের একবর্গের গো-সন্তানেরা গো-বুদ্ধির দৌলতে শুধু এটুকুই বোঝেন যে সন্ত্রাসবাদী মানেই মুসলমান, বোঝেন জঙ্গলে যারা এতটুকু প্রতিরোধ করে তারাই মাওবাদী, আর বোঝেন তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে থাকা বর্গের মানুষরা চাকরী খেয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে উচ্চবিত্ত উচ্চবর্ণের জায়গাগুলো দখল করছে। আবার এহেন গো-মস্তিষ্কের পরিচালকেরা পাড়ায় পাড়ায় ক্লাস নিয়ে পরিকল্পিত ‘ফ্যাব্রিকেটেড’ উপায়ে দলিত-পিছড়েবর্গের মানুষদেরকেই ধর্মের নামে সেপাই গড়ে তুলে ঠেলে দিচ্ছেন দাঙ্গা ও মৃত্যুর মুখে। বিজেপির হিন্দু সংঘগুলোর এই কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রাজনীতি অর্থাৎ মুসলমানদের প্রতি দলিত হিন্দুদের খেপিয়ে তুলে দুই পক্ষের মানুষেরই শবদেহের উপর উচ্চবর্গের গেরুয়া পতাকা ওড়ানোর প্রচেষ্টা যেমন শুরু হয়েছে। তেমনই, আশার কথা, ধর্মের আর জাতিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে শ্রেণীশোষণ, অনুন্নয়ন, মানবাধিকার, বাজারের একাধিপত্য, বেকারত্ব, শোষণকারী কর-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াইগুলো বিভিন্ন দিক থেকে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। মগজ বেদখলের বিরুদ্ধে শাণিত লড়াই জারি থাকুক। সিনেমা জারি থাকুক।
আজকাল আমরা বড্ড ব্যস্ত; ছুটছি অনেকে কিছুর পিছনে, অনেক কিছু পাওয়ার জন্য। এভাবে আমরা একদিন হারিয়ে গেলাম গোলকধাঁধার সেই ভুল রাস্তাতে। ব্যস্ত জীবনে সময় কোথায় ঠিক-ভুল নির্বাচনের? তাই সামনে যে রাস্তা পেয়েছি সে রাস্তা ধরে এগিয়ে গিয়েছি। হোক না সেই রাস্তাতে শবদেহের ভিড়, শিশুর বিচ্ছিন্ন দেহ, অথবা যে রাস্তাতে মৃত মায়ের বুকে সন্তানের স্তন্যপান করার নিষ্ফল চেষ্টা। আমরা তো ভারত মাতার সন্তান। আমাদের অন্য মায়েদের ধর্ষিত, মৃত শরীর নিয়ে ভাবনা চিন্তার অবকাশ কোথায়? জয়হিন্দ! ভারত মাতা কি জয়! আমাদের দিকনির্দেশক ধর্মগুরু-রাজনৈতিক গুরুরা বলেছেন এইসব রাস্তাতে চোখ-কান-মগজ-বিবেক বন্ধ করে কিছুটা চলতে পারলে আমাদের আকাঙ্ক্ষার ‘হিন্দুস্থানের’ নির্মাণ একদিন হবে।
তবে এখনো বেশ কিছু মানুষ স্বপ্ন দেখে, প্রেমে পড়ে, ফুটপাথে গোলাপ সাজানো থাকে। এখনো যাদের হৃদয় নামক অঙ্গটি শুধুমাত্র রক্ত সঞ্চালনের জন্য নয়। সেই মানুষগুলির পক্ষে এই গোলকধাঁধার ভুল রাস্তাতে চলা কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। সারাদিন এই ভুল পথের যাত্রায় অবসাদ ও হতাশা তাঁদের চোখের ঘুম কেড়ে নেবে। অথবা অস্থির হালকা ঘুমে স্বপ্ন দেখবে তারা।
‘গুরু …’ এসে পথ দেখাবে; হিংসা থেকে নিষ্ক্রমণ ও হিংসাকে আক্রমণের পথ। সেই স্বপ্ন দেখার রাতে ঘরহীন ফুটপাথের ঘুমন্ত নাগরিক, ভাঙা ঘরের বস্তিবাসী, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া কারখানার শ্রমিক, ঋণের দায়ে ধুঁকতে থাকা কৃষক, ডেলিপ্যাসেঞ্জারে প্রতিদিন চিঁড়ে চ্যাপ্টা হয়ে কাজ করতে আসা অসংখ্য মহিলা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা নতুন জীবনগুলো – এমন অনেকে একসাথে ‘গুরু…’র সন্ধান পাবে। শর্ত শুধু একটাই। যাদের হৃদয় এখনো যন্ত্রে পরিণত হয়নি, ‘গুরু’ তাঁদের স্বপ্নেই আসবেন।
সেদিন ভণ্ড ধর্মগুরু, রাষ্ট্রগুরুদের দেখানো পথগুলো ভুল প্রমাণিত হবে। আমরা আবার একদিন একসাথে দীক্ষা পাবো প্রেমের পথে হাঁটার। লালন, কবীর, … সকলেই অনেকভাবে এই প্রেমের পথের কথা বলে গেছেন। সুকৌশলি ক্ষমতার নির্মিত ব্যস্ত জীবন, স্কুল-সিলেবাসের জ্ঞান ও অন্যান্য মোহবদ্ধতা সেসব ভুলিয়ে দিয়েছে ক্রমে। তবে আজও প্রেমই সত্যি; যা পৃথিবীর সমস্ত হিংসার সাথে লড়াই করবার একটি শক্তিশালী অস্ত্র।
আমাদের রাস্তার পাশের বিগ বাজারগুলো এখন ‘প্রেম’ বিক্রি করে। প্রেম বাজারি হয়েছে; মনুষ্যত্ব নিলামে উঠছে। সে সুযোগে চারিদিকে ধর্মগুরু আর রাজনৈতিক গুরুরা হিংসার আগুনে হাওয়া দিচ্ছে। ‘আচ্ছে দিনের’ মোহে আমরা সেই আগুনে ঝলসে যাওয়া রক্তে পিছিল হওয়া রাস্তাতে নির্বিকারে হেঁটে চলেছি।
ব্যস্ত জীবনের সামান্য অবসরে, আজ পিপল্‌স ফিল্ম কালেকটিভের উদ্যোগে যোগেশ মাইম আক্যাডেমিতে আমরা টুকরো সিনেমা, কিছু আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম, যে গোলকধাঁধার ভ্রান্ত পথে আমরা হেঁটে যাচ্ছি তার টুকরো নিদর্শন। ‘কেয়া হুয়া ইস শহর কো?’ (নির্দেশনা- দীপা ধনরাজ), ‘হোয়াট দ্য ফিল্ডস রিমেমবার’ (নির্দেশনা- শুভশ্রী কৃষ্ণণ), ‘রাম কে নাম’ (নির্দেশনা- আনন্দ পটবর্ধন), ‘দ্য বয় ইন দ্য ব্রাঞ্চ’ (নির্দেশনা- ললিত বাচানী), ‘দ্য মেন ইন দ্য ট্রি’ (নির্দেশনা- ললিত বাচানী), ‘ফাইনাল সলিউশান’ (নির্দেশনা- রাকেশ শর্মা), ‘দ্য ওয়ার্ল্ড বিফোর হার’ (নির্দেশনা- নিশা পাহুজা), ‘মুজফফরনগর বাকি হ্যায়’ (নির্দেশনা- নকুল সিং সাহানি) – এই ছবিগুলি থেকে নেওয়া অল্প অংশগুলো ক্রমপর্যায়ভুক্ত ভাবে সাজিয়ে দ্বৈপায়ন দেখানোর চেষ্টা করলেন এই সময়ের ধর্ম/ভক্তির নামে জিগির তুলে বিষিয়ে দেওয়া অসুস্থ সমাজের নৃশংস বাস্তব দিকগুলো। আমাদের দেশের এই অসুস্থ সমাজটির অসুখের একটি ঐতিহাসিক ধারা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ আছে। সংখ্যাগুরু মৌলবাদ, হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার ধারণা ও তার সাথে কোম্পানী নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রযন্ত্রের জোটের মিশেল সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদের এই অসুস্থ ইতিহাসের সাথে পরিচিত হওয়াটা জরুরী। কারণ এই লড়াইয়ে প্রতিপক্ষের জোরের জায়গাগুলোর সাথে আমাদের পরিচয় না হলে পরাজয় সুনিশ্চিত। দ্বৈপায়ন দেখালেন কখন কোন সময়ের প্রেক্ষিতে, কী কী পন্থাতে এই হিংস্র ধর্ম-রাজনীতি জনমানুষের চেতনাকে গ্রাস করেছে। যে হিন্দুত্ববাদের মধ্যে জাতিপ্রথার কারণে দলিত, নিপীড়িত মানুষেরা বর্ণহিন্দু-পরিচালিত ব্রাহ্মণ্যবাদী ব্যবস্থায় ক্রমাগতই লাঞ্ছনার, বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, হচ্ছেন; কীভাবে কখনও কখনও তাঁদেরকেও ‘অখন্ড হিন্দুসত্তা’র মধ্যে গ্রাস করে তাঁদের একটি অংশের হাতে মুসলমান অপরকে নিকেশ করার জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে অস্ত্র। দাঙ্গার আগুনে নিম্নবর্গ সংখ্যালঘুর সাথে নিহত হয়েছেন বড় অংশের হিন্দু দলিতরাও, যারা দুজনেই একই ব্রাহ্মণ্যবাদী ব্যবস্থার শিকার। এই সিনেমাগুলোর বিভিন্ন অংশ আমাদের কাছে আরও স্পষ্ট করলো, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আগামীর লড়াইটা চেতনার স্তরে অনেকখানি। কারণ আমাদের নিজেদের মানুষের মধ্যে কি সুচতুর কৌশলে এই হিংসার বপন করা হয়েছে, যেখানে পূজিত হন নাথুরাম গডসে আর ভগত সিং; কিন্তু আসফাকুল্লার দেশের স্বাধীনতার জন্য মৃত্যু হলেও সুচিন্তিতভাবে আসফাকউল্লাকে বিস্মৃত করে দেওয়া হয়।
কালেকটিভের তরফে দ্বৈপায়ন জানান যে আমরা এই অডিও ভিস্যুয়াল উপস্থাপনা, ছবির টুকরো ও তাকে ঘিরে কথা, নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় ঘুরতে চাই। আয়োজন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিবর্গ, গণসংগঠন, নাগরিক উদ্যোগের সংগঠক, উদ্যোক্তারা উৎসাহী হলে যোগাযোগ করতে পারেন।
এর পরে মনোজ কুমার সিং তার জন্ম ও কাজের অঞ্চল গোরখপুর নিয়ে কিছু কথা বললেন। মনোজ ‘গোরখপুর অনলাইন’ বলে এক ওয়েব-পোর্টাল চালান। স্বাধীন সাংবাদিক। গোরখপুর ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে শুরু করে লোকরঙ্গ ইত্যাদি নানান ধরণের সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ন কর্মী। তার কথা ওই অঞ্চলে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ঘনীভূত হওয়া অশুভ হিংসার প্রতিচিত্রকে সামনে মেলে ধরতে সাহায্য করলো। তাঁর কথায়, “উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর তরাই অঞ্চল নেপাল সীমান্তের পাশে। সেখানকার এক প্রাচীন মঠ, যেখানে টিমটিমে প্রদীপের আলো; ঠিক মাজারের মতোই খুব ছোট বাবা গোরখনাথের স্তূপ যার চারিদিকে সাদা চকে আঁকা অসংখ্য মানত। এই নাথপন্থী সাধুরা বেশ ভিন্ন ছিলেন; এই নাথপন্থী সাধুদের প্রভাবে ওই অঞ্চলের বর্ণহিন্দুদের বিরুদ্ধে অধিকার আন্দোলনের একটা নতুন সূচনা হয়। সনাতন রীতির বিকল্পে এই ধর্ম আন্দোলন ক্রমশ দলিতবর্গের মধ্যে বিস্তার লাভ করে। তবে হিন্দুত্ববাদের বিস্তার এই ধারাকে টিঁকতে দেয়নি। সনাতন হিন্দুত্ব ক্রমশ এই মঠের সংস্কৃতিকে গ্রাস করে নেয়। দিগ্বিজয়-এর পুরোহিত কালীন সময় থেকে সনাতন ধর্ম, ক্ষমতার রাজনীতি ও বাজার একসাথে জোট বেঁধে এই প্রাচীন গোরখনাথের ধারাকে প্রতিআন্দোলনের রূপ দিয়ে এর গতিমুখ ঘুরিয়ে দেয় মুসলমান বিদ্বেষের মধ্যে। মন্দিরের দখলকৃত জমি, সম্পত্তি ও এলাকা বাড়তে থাকে; মূর্তি পুজোপাটের ধূমধাম (গোরখনাথ মূর্তি বিরোধী ছিলেন; তাঁরই মন্দিরে বসতে থাকে যাবতীয় দেবদেবীর মূর্তি)। মাউ দাঙ্গার আগে ও পরে এই গোরখনাথের মন্দির হয়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক হিংসার একটি শক্ত ঘাঁটি। দাঙ্গার হোতা মঠের বর্তমান মহন্ত যোগী আদিত্যনাথ বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। কীভাবে যেন সে আজ একইসাথে ধর্ম ও রাষ্ট্র নেতা হয়ে উঠেছে হিংসার রাজনীতিকে অবলম্বন করে। যে সময় থেকে আদিত্যনাথ এই সাম্প্রদায়িক হিংসা আর মৃত্যুর রাজনীতি প্রকাশ্যে করে যাচ্ছেন সেই সময়ে কেন্দ্রে সেকুলার কংগ্রেস ও রাজ্যে একাদিক্রমে সপা, বসপা প্রশাসনিক ক্ষমতায় থাকলেও তারা আদিত্যনাথের হিন্দু যুব বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচুর মৌখিক গর্জন করলেও কোন ধরণের কার্যকারী পদক্ষপ নেওয়া হয় নি। বরং এই সেকুলার দলগুলি বিভিন্ন সময় ২২ জন প্রশাসনিক কর্তাকে বদলি, সাসপেন্ড করার ব্যবস্থা করে; যখনই ওই প্রশাসনিক কর্তারা যোগী আদিত্যনাথের হিংসার প্রচার প্রতিরোধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে”।
মনোজ কুমার এর কথায় গোরখপুরের আরেকটি চিত্র বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাইবো। “একদল গেরুয়া বসনধারী যোগী (যারা প্রেম বিস্তার করে বেড়ায়) হাতে সারেঙ্গি নিয়ে গ্রাম, মহল্লায় অনন্ত পথ হেঁটে চলেছেন; গানের শব্দে ও ছন্দে প্রেম বিস্তারের কথা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। একই সাথে তারা প্রচার করছেন গোরখনাথের মতাদর্শ। ইতিহাস বলছে গোরখনাথের প্রচার বিস্তারে এই যোগীদের ভূমিকা সব থেকে বেশী। এরা সকলেই মুসলমান ধর্মের। বহু দশক ধরে এরা সারেঙ্গি নিয়ে গ্রামে মহল্লায় গোরখনাথের চারণকবি হয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন আজ অবধি। তবে পুরোহিত দিগ্বিজয়ের আগে নাথমন্দিরে এদের সম্মানিত স্থান ছিল। আজ মন্দির থেকেই তারা বিতারিত। খুব স্বাভাবিক, যে মন্দিরে হিংসা বাস করে সেখানে প্রেমের জায়গা কোথায়? আজ ওই সারেঙ্গি বাদক গেরুয়া বসনধারী সন্তদের নিজেদের মোল্লাবাদী ধর্মের কাছ থেকেও একইভাবে অবিশ্বাস ও আঘাত নেমে এসেছে। আজও আছেন তারা একই ভাবে তবে খুঁজে পাওয়া মুশকিল, জীবনের তাগিদে নানা সময় নাম পরিচয় বদলাতে হয় তাদের। প্রায় এক লক্ষ মুসলমান নাথপন্থী যোগী সারেঙ্গি বাজিয়ে ঘুরে বেড়াতেন ওই অঞ্চলে, এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও তাদের দেখা মেলে।”
এই বিষয় নিয়ে পড়তে পারেন মনোজের লেখা এই লেখাটি- http://thewire.in/119102/before-the-rise-of-hindutva-gorakhnath-nurtured-muslim-yogis/
এই ভীত সন্ত যোগীদের বর্তমান গোরখপুরের বীভৎস বাস্তবকে, তথ্যচিত্রে হিসাবে দলিলীকরণ করা হয়েছে ‘স্যাফ্রন ওয়ার’ নামক সিনেমাটির মাধ্যমে; যার পরিচালকত্রয়ী রাজীব যাদব, লক্ষ্মণ প্রসাদ, শাহনওয়াজ আলম। এই ছবিটি প্রদর্শনের সময় সাউন্ড কর্ডের কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ হয় যার ফলে বেশ কিছুটা অংশে সাউন্ড ঠিকমত শোনা যায়নি। প্রথম বার হওয়া এই অপ্রত্যাশিত সমস্যার জন্য পিপল্‌স ফিল্ম কালেকটিভ দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। সমস্যাটি চিহ্নিত করা হয়েছে ও ভবিষ্যতের অনুষ্ঠানে এই সমস্যা যাতে না হয়, সংগঠনের পক্ষে তার ব্যবস্থা করা হবে।
যাদের হৃদয় এখনও শুধুমাত্র রক্তসঞ্চালনের যন্ত্র হয়ে ওঠেনি; তাঁদেরকে বলছি : খুব ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও যদি একটু চেষ্টা করে ইউটিউবে এই ছবিটা দেখে নিতে পারেন তাহলে কিছু লোভী মানুষ ও তাদের ক্ষমতার তৈরি করা আচ্ছে দিন, হিন্দুরাষ্ট্র, মুসলমান বিদ্বেষ এসব নিয়ে যে মায়াজাল তাকে ভেঙে দেওয়া সহজ হবে।
সব শেষে, মনে করিয়ে দিই; গুরু বা নির্মোহী সন্তকে আগামীর স্বপ্নে দেখবেন। কারণ সে আপনার অন্তরেই লুকিয়ে আছে। আপনার হৃদয়ে, মানবিকতা, মনুষ্যত্ব, বিবেক, আর গভীর প্রেম উপলব্ধি নিয়ে যখন আশেপাশের ধর্ম-রাজনীতি ও নিকৃষ্ট ক্ষমতার মায়াজালকে দেখবেন। আপনি প্রতিরোধী হয়ে উঠবেন, কথা দিচ্ছি। আমরা একসাথে নানাভাবে হিংসার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পথে নামবো। আমরা জয়ী হবো। আমার দেশের মাটিতে কখনো মৃত মায়ের বুকে খাবার খুঁজবে না আগামীর কোন শিশু। এই প্রতিশ্রুতিতে …
অপেক্ষায়…
প্রেমের জয় সুনিশ্চিত।
রিপোর্ট – লাবনী।
Little Cinema Diary / Santragachhi, 25th March

It was a particularly sweaty afternoon that Little Cinema had gathered at Santragachhi among a bunch of smiling little faces. An ‘auspicious’ day indeed, on the occasion of Ramnavami – the celebration of which has resulted in targeted violence all over the state where it had no cultural significance a couple of years earlier. When the far right is exercising its political power with all its might, when it is entering our everyday discussions, everyday practices seamlessly, when it is molding everything into its mold of a single Hindu Rashtra, the right to question almost becomes a luxury. It is precisely in such a situation that the Little Cinema campaign of People’s Film Collective has been trying to reach out to the young minds, attempting to engage with them differently in various parts of the state with cinema and conversations as its only weapon.

Santragachhi Sporting Club was our venue, with a very old campus of an industrial training institute and some shrines of Baba Dakshinaray – the tiger deity around. Legend has it, as some bystanders informed us, the infamous dacoits of Bengal earlier used to pray there before they ventured into the Sundarbans. However, small rallies celebrating the birth of Ram were very much happening in the vicinity. Nothing could still stop children, tentatively in the age group of 7-12 years, pouring in the play ground for the films, with their usual cacophony in full volume. Trina and Labani – our discussants for the day – started with a small clip on Charlie Chaplin and proceeded with a line-up of films from different parts of the world.

Every time we screen films in foreign languages, we find out the myriad ways they relate to the films. The Chairy Tale, for example, found particular resonance with children, everyone laughing at the beats of Ravishankar’s music and the theatrics on screen. One little comrade came up to the front and shared beautifully how the film made her feel for the non-living beings around us, how they feel too, and how all of us should be caring about that. How we all use trees, animals and never care about them after our needs are met, and yet they keep silently helping us. Later children forged connections of this film with the audio-visual rendition of Gaon Chhorab Nahi.

Two and Two, for example, stirred everyone in the audience and Somdatta, Sourav, Sampurna all convinced us how one should be standing up for the truth no matter what; how it is the remnants of hope that ultimately matters. One indeed falters at the escalation of the student being shot, and yet someone writes the right answer at the face of terror, and we believe these children with their glowing faces would be that hope in our future at the face of the oppressive Fascistic aggression. The Accordion captured everyone’s heart with the sheer spread of love even while you’re being affected and so did Neighbours. These vibrant minds talked in refreshing simple terms and conveyed the futility of animosity between neighbours, between classmates, friends, communities and the like – even when just a little while ago they were leaving no opportunities to annoy each other!

Perhaps it was an ultimatum about the fight that lies ahead, or perhaps it was an untimely reward for the chord we were able to strike that day that a Nor’wester came in and disrupted our screening. The children could only see six of the eight films that were planned, with everyone rushing around in the storm and rain to save themselves and our electronic equipments. Somehow it lacked completion, who knows what gem awaited us with the rest of the film and the rest of the kids whose insights we had to miss. However, we got the chance to chat with some organisers and fellow parents of the children who unanimously agreed that the event has been unexpectedly engaging with the children actively taking part in the discussions and responses. As we talked to some of the children they promised to write to us and draw to us.

Returning from Santragachhi, after the storm, we could not forget how such young minds relate to concerns with events in their own life, how they feel strongly about things, how they demand to be treated as thinking, feeling, little people. Like the language of the accordion connects the beggar and thief with the two children, the language of cinema has the potential to affect; the task that lies ahead is to build such spaces for these minds to be able to spread their wings, collectively.

Report: Jigisha
Photography: Kunal
(To invite us to your neighbourhood, school, village, basti or any place where children gather, write to: littlecinemabengal@gmail.com)
লিটল সিনেমার পক্ষ থেকে বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা নিয়মিত চেষ্টা চালাচ্ছি আমাদের গ্রাম-শহরের শিশু-কিশোর বন্ধুদের মাঝে পৌঁছে যেতে। এই দুঃসময়ে দাঁড়িয়ে তাদের সাথে ভাগ করে নিতে সিনেমা দেখার আনন্দ। যে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে হয়তো তারা শিখে নিতে পারবে আমাদের চারিদিককে প্রশ্ন করার প্রয়োজনীয় অভ্যেস।
কাজটা যে খুব সহজ, তা নয়। কারণ মানুষের চেতনা ও অভ্যাসের মধ্যে ‘বিনোদন’ শব্দটার অর্থ ধর্ম-রাষ্ট্র-বাজারের জোট এমনভাবে বদলে দিতে পেরেছে, যে আমরা যখন এখানে অন্য রকম সিনেমা দেখাতে যাচ্ছি, তখন তাদের চেনা-জানা সিনেমার সাথে তার পার্থক্য বিস্তর। ফলে অপরিচয়ের সামান্য দ্বিধা বা নতুন ধরণের সিনেমার সাথে পরিচয়ের প্রাথমিক সংকোচ কাটানোটাও কাজের অংশ হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আমাদের অবাক করে এমন অসংখ্য প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি যা থেকে বোঝা শক্ত নয় যে আমাদের ছোটো বন্ধুরা নিজেদের জীবনের সাথে দেশ বিদেশের এই সিনেমাগুলির মিলও যে পাচ্ছে না তা নয়। আর তাই তাদের জানা-বোঝা আমাদেরও প্রতিনিয়তই অনেক কিছু নতুন করে শেখাচ্ছে।
গত ৯ ও ১০ মার্চ মুর্শিদাবাদের পাঁচগ্রামে আমরা এমনই কিছু শেখার ও শোনার চেষ্টা করেছি। বহরমপুর থেকে এক ঘণ্টা দূরত্বে পাঁচগ্রাম, বাংলার আর পাঁচটা গ্রামের মতোই। সেখানকার মানুষের জীবনে অলাভজনক চাষ-আবাদ আছে, জীবিকার তাগিদে শ্রমিক পরিযায়ন আছে, চাকুরিহীন মানুষের বেঁচে থাকার তাগিদ থেকে ছোট ছোট ব্যবসা, মুদির দোকান, বিড়ি-বাঁধা এসবই আছে। একই সাথে এই গ্রামে নব্বই শতাংশের ঘরে টিভি আছে, টিভিতে বাহুবলী, সাল্লুভাই, আর দাদা-দিদি আছে। বাইক বিক্রির বাজার তৈরির জন্য পাকা রাস্তাও আছে। অসম্ভব নিরাশা মুক্তির জন্য মোড়ে মোড়ে এখন বাংলা মদের দোকানও আছে। এসব থাকা ‘স্বাভাবিক’ হয়ে ওঠার সাথে, একটা বড্ড ‘অস্বাভাবিক’ বিষয় আজও চোখে পড়ে এই গ্রামে। বিকেল চারটের পর থেকে বাজারগুলোতে অসংখ্য জটলা বাঁধা তাসের আসর। পূর্বজদের সময় থেকে চলে আসা এই বিনোদনটিকে বাজার এখনো গিলে খেতে পারেনি। কাজের শেষে এই হিন্দু-মুসলমান (পুরুষেরা) একসাথে বসে নিয়মিত তাস খেলেন। নন্দগোপালের প্রিয় তাস খেলার পার্টনার গরু জবাই করেন; তারা এক সাথে বসে তাস পেটান, চা, মুড়ি, তেলেভাজা, আর সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেন। কোন প্রশ্ন ওঠে না, ধর্ম নিয়ে। কিন্তু এর মধ্যেও কেউ বলে ওঠেন আজকাল পরিস্থিতিটা বদলাচ্ছে, বেশি বেশি জলসা আর হরিনামের আসরে এই পরিস্থিতিটা বদলাচ্ছে। কিছু পাড়ায় যুবকদের মধ্যে একটি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শাখা খুলেছে বলে শোনা গেল।
তবে সংঘ যদি প্রতিটা গ্রামে এভাবে ঢুকতে পারে, আমরাও পারি। ওরা যদি হিংসা চায়, আমরা প্রেম চাইবো। আজও বিশ্বাস করি আমরা মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই-এর মধ্যে আদিম সৌন্দর্য আর প্রেম লুকিয়ে আছে। কিছু পাঠ্যবই-লেখক তথা ক্ষমতাবানেরা যদিও মানুষের আদিম রিপু-হিংসা নিয়েই বেশি কথা বলে। সত্যিটা অন্য। তাই ক্ষেতে ধান কাটতে কাটতে মাটির মানুষেরা গান বাঁধেন;
… ও মন আপন ঘরের মাটি… মন চিনে নেও রে…
ও মন জাইনে নেও রে, আমার আল্লাহ কেমন জন
আপনা দেহের মাঝে আছে নিরঞ্জন
মন চিনে নেও রে…
ভাইরে ভাই,
নানা রঙের গাভীন রে ভাই, একই রঙের দুধ,
হিন্দু মুসলিম আছেন যতো রে… ভাই রে একই মায়ের পুত
ও মন একই মায়ের পুত… মন চিনে নেও রে…
বাজারি মিডিয়া আমাদের এক বীভৎস বিনোদন মোহের মধ্যে দিয়ে যখন হিংসার বিস্তারে প্রণোদিত করবে, আমাদের পৌঁছে যেতে হবে আমাদের মাটির গান, মানুষের সিনেমা, নাটক নিয়ে। পাঁচগ্রামে ছোটদের সিনেমা ও সন্ধ্যাবেলা ছোটয়-বড়োয় মিলে ‘তুরুপ’ দেখানো এই কাজেরই অংশ।
পাঁচগ্রাম হাই স্কুল আর পাঁচগ্রাম গার্লস স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য হাই স্কুলের অডিটোরিয়ামে গত ৯ আর ১০ মার্চ বসেছিল লিটল সিনেমার আসর। আমরা সিনেমা দেখানোকে ভাগ করে নিয়েছিলাম চার ভাগে। প্রথম দিন ছিল ছেলেদের জন্য সিনেমার আসর। আর পরের দিন মেয়েদের আসর। দু’দিনই, দশটা থেকে একটা ছিল ক্লাস ফাইভ থেকে সেভেনের পড়ুয়াদের জন্য, আর দুটো থেকে পাঁচটা ছিল এইট থেকে ইলেভেনের পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট।
প্রথম দিন প্রথম পর্বে ৭০০ জন ছাত্র এসে জমা হয় স্কুলের প্রেক্ষাগৃহে। আমরা লিটল সিনেমার চারজন ও একজন শিক্ষক মিলে এত ছেলেদের সিনেমা দেখাতে গিয়ে একটু হিমশিম যে খাইনি তা নয়। কিন্তু, তা ছাপিয়ে আমাদের অবাক করে দেয় কয়েকজন পড়ুয়ার সিনেমা পরবর্তী কথোপকথন। পরের ভাগে ক্লাস এইট থেকে ইলেভেন-এর প্রায় ৩৫০ জন ছাত্রের প্রতিক্রিয়া আমাদের কাছেও প্রত্যাশিত ছিল না। শুভাশিস দা-র পরিচালনায় সিনেমাগুলো দেখার পর, ছাত্রদের সাথে মিলে বিশ্লেষণগুলো ছিল আমাদের কাছে এক বড়ো প্রাপ্তি। যে সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা ভেবে ফেলেছি গ্রামের বিনোদনের সংজ্ঞাটা হয়তো বা বরাবরের জন্য বদলেই গেছে তখন বিকল্প বিনোদনের সংস্কৃতিতে পাঁচগ্রাম বয়েজ স্কুলের ক্লাস এইট-ইলেভেনের ছাত্ররা যে আগ্রহ দেখিয়েছে, তা আমাদের আশা জোগায়। ভরসা জোগায়।
পরের দিনটি ছিল মেয়েদের। এই ছোটদের সিনেমা উৎসবের দ্বিতীয় দিনটা আমাদের নিজেদের কাছেও ছিল অনেক কিছু শেখার দিন। জানার দিন। ক্লাস ফাইভ থেকে সেভেনে পড়া প্রায় ৬০০টি মেয়ে কি অপূর্ব স্থিরতা ও মনোযোগের সাথে সিনেমাগুলো দেখলো,আর সেগুলো নিয়ে নিজেদের মতামত রাখলো। পরবর্তী পর্বের, ক্লাস এইট থেকে এগারো ক্লাসের ছাত্রীরা সিনেমার পরে যে কথাগুলো বলছিল সেগুলোও ছিল অনুপ্রেরণার। ভরসার। সত্যজিৎ রায়ের দুই দেখে বাঁশি-বাদক ছেলেটির পক্ষ নেওয়া। চান্দা কে জুতে সিনেমায় অবচেতনে কখন চান্দাকে নিজেদের মধ্যেকার একজন করে তোলা। মহীনের ঘোড়ার রাবেয়া-রুকসানাদের মতো জাদুকরের মায়াতে না হারিয়ে যাবার প্রতিজ্ঞা। প্রতিবেশী নামক সিনেমার সাথে নিজেদের গ্রামের সীমান্তের জমি বিবাদকে উল্লেখ করে এই সিনেমার পরিণাম বিশ্লেষণ করা। খুদে সন্ত্রাসবাদী সিনেমাতে নিজেদের ভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান ও মানবিকতা,আর প্রেম যে সবশেষে জিতে যায় তার উল্লেখ করা। দুই এবং দুই সিনেমা শেষ বিচারে আসলে মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে আসল মানুষের সত্যিটাকে বলে তা উল্লেখ করা। প্রতিটা সিনেমার পর সমবেত প্রতিক্রিয়া সহ ব্যক্তিগতভাবে এতো সংখ্যক মেয়েরা উঠে এই রকম নানান ভাবে সিনেমাগুলোকে নিজেদের জীবনের সাথে জুড়ে বিশ্লেষণ করলো, যা আমাদের কাছে এক নতুন ধরণের পাঠ হয়ে রইলো।
যে সময়টা জুড়ে আমাদের আশংকাগুলো ঘনীভূত হচ্ছিল, সেই সময়ের বুকে পাঁচগ্রামে এই দুই দিন ব্যাপী ছোটদের সিনেমা উৎসব যেন বা এক নতুন পথের সন্ধান দিল। শেষ দিনের অভিজ্ঞতা আমাদের মনে হয় একটা সূত্রও দিল! যদি দুনিয়া বদলের লড়াই শুরু হয় সেখানে এই মেয়েদের ভূমিকা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। কারণ, আজও এই গ্রামগুলোতে মেয়েদের অনুভূতিগুলো,তাদের লড়াইয়ের প্রশ্নগুলোকে পুঁজিবাদ সম্পূর্ণ বোকাবাক্সে ভরে দিতে পারেনি। তারা রঙিন পাখির মতো উড়বার স্বপ্ন দেখে, শুধু বাজপাখী হয়ে উঠবার ক্ষেত্রটা প্রস্তুত করলেই হবে।
এই সিনেমাগুলো যখন মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত গ্রামে প্রদর্শিত হচ্ছে, বা লেখাটা যখন লিখছি; আমাদের থেকে অনেক অনেক দূরে এক বিশাল কৃষক আন্দোলন গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের যৌথ লড়াই কবে গড়ে উঠবে জানা নেই! তবে গ্রামে তাসের আসরে বিজয় মালিয়া, ললিত মোদী, নীরব মোদী নিয়ে উষ্মা আছে। এখনো একসাথে অধিকার সমেত বাঁচার স্বপ্ন দেখেন। সংঘীরা এই স্বপ্নগুলো ভাঙার প্রতিনিয়ত শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প লড়াইয়ের ময়দান তৈরি করতে দুর্বলতা আর তার সুযোগে পুঁজিবাদী বাজার, রাষ্ট্র একসাথে মিলে আমাদের পিষে দেবার আগে আমরা কি পারি না গ্রামে গ্রামে এই ভাবে পুঁজিবাদী বিনোদনের বিকল্প বিনোদন তৈরি করতে?
ফেরার পথে মনে হল চারিদিক থেকে আসা এলোমেলো হাওয়ারা দুরন্ত, আর মরা রোদেরা তেজ বাড়াচ্ছে প্রতিদিন একটু একটু করে, চোখ পুড়ে যাচ্ছে আমাদের সকলের। চারিপাশের হরেক রঙেরা একটু একটু করে ঝাপসা হয়ে, সাদা-কালো রঙ নিচ্ছে। এই নতুন দুনিয়াতে সহজেই ক্লান্ত, অবসাদগ্রস্থ হয়ে ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু এসব গ্রামের সবজে রঙের টলটলে পুকুর, আর ধানক্ষেতের স্পর্শ মাখা পাগলাটে কিছু হাওয়া, আর মাটির দালান আমাদের আশ্রয় হতে পারে। একটু চোখ বুজে নিঃশ্বাস নিয়ে দেখো, আধপোড়া চোখেও একটু অন্যরকম স্বপ্ন খুঁজে পাবে। তবে অনুভূতিটুকু রোদের তেজে শুকিয়ে গেলে বলতে পারবো না কি হবে! বিশ্বাস করো এখনো রাস্তা হারাইনি আমরা, এখনো স্বপ্ন দেখা যায় দুনিয়া বদলের, দশ দিনের না হলেও মাটি আঁকড়ে দশ বছর সময় দিলে এই বিকট পরিস্থিতিটা বদলাবে। প্রতিটা গ্রাম-মফস্বলের অভিজ্ঞতা আমাদের সেই শিক্ষাই দিচ্ছে, চলো গ্রামকে নতুনভাবে জানি, দেখি, বুঝি। নাসিক থেকে বোম্বে শহররের দিকে একটা মিছিল এগিয়ে চলছে। ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করা দশ হাজার কৃষকের মৃত্যুর প্রশ্ন নিয়ে পঞ্চাশ হাজার মানুষ শহরের একটা গোটা উড়ালপুল স্তব্ধ করে দিয়েছে। খেলাটা চলবে, আমরা জিতবো, যদি একসাথে বেঁচে থাকার লড়াই, অধিকার ছিনিয়ে নেবার লড়াইটা দেওয়া যায়। বিকল্প সাংস্কৃতিক পরিসর গড়ে তোলাও সমান জরুরী এই অসম লড়াইয়ে।
রিপোর্ট – লাবনী
ছবি – কুনাল ও লাবনী
লিটল সিনেমার পক্ষ থেকে কুনাল, শুভাশিস, জাহাঙ্গীর ও লাবনী এই দু’দিনের উৎসব পরিচালনা করেন।
Little Cinema was back in Sundarpur village, Khanakul on 4 March 2018, for the second time after a successful screening last year. Hundred odd residents gathered in the growing dusk in front of a makeshift stage decorated with balloons. Families, young mothers with their babies, grandmothers, college goers standing next to their motorbikes and youngsters armed with papad in plastic packets.
Last year, some of the children had written to us—drawings and letters—which Subhasish da showed before starting the screenings. Priti Mondol, who was sitting right in front, saw her artwork on the big screen. What a feeling that must have been!
We started with Neighbours, a film by Norman Mclaren. Throughout the screening there were whispers amongst the audience. What will happen next? What will the two men do? A lady in the audience commented after the screening that fights between neighbours can only lead to unhappiness, like in the film, where everything was lost at the end. Subhasish da spoke about ‘fights’ that occur between countries, namely India and Pakistan. How much of that is manufactured by politicians as a distraction from issues that crop up within the countries? It is vitally important to begin to think critically about these issues.
The next film was Two and Two by Babak Anvari. This film shows how a higher authority, represented by a teacher and the school principal, insist that two and two makes five, not four: a way of propagating falsehoods through a position of power. Very often, it is people in rural India who have to face the brunt of decisions taken by the ‘experts’ from the city—decisions that are taken without consideration for both the people themselves and the spaces that they inhabit. Is accepting what is wrong, right? How does one speak up against what is false and wrong? Where does one find the courage of conviction?
After the screening, Amarjit, a college student, spoke strongly against simply accepting what people in the so-called position of power say. The conviction in the young man’s voice was wonderful to experience.
The last film of the day was Kaphal, directed by Batul Mukhtiar. This film, in which the child artistes are actually from the area itself shows childish innocence in a space where superstition and caste discrimination is prevalent. The use of humour and highly relatable situations makes this a film that can be viewed by both the young and the not so young. It also opens up a whole new avenue for discussion on bias, understanding difference and how, we as adults are the ones responsible for this creation of difference.
Report: Paroma Sengupta.
Photography: Aniruddha Dey.

মোটর ভেহিকেল্‌স এর পাশ দিয়ে বেলতলা রোডে ঢুকতেই চোখের সামনে এক ঝাঁক বাচ্চা এসে উপস্থিত। ১৫ই অক্টোবর আমরা পিপল্‌স ফিল্ম কালেকটিভের পক্ষ থেকে লিটল সিনেমা টিমের ন’জন মিলে গিয়েছিলাম পেয়ারাবাগানে ছোটদের সিনেমা দেখাতে। সে এক হৈ হৈ ব্যাপার। সবাই যেন উৎসবে মেতেছে। রাস্তার খানিকটা অংশ জুড়ে আদ্ধেক তৈরি হওয়া প্যান্ডেলের বাঁশের কাঠামোর গায়ে পর্দা টাঙিয়ে সিনেমা দেখা। পাশ দিয়ে যাতায়াতের জন্য খানিকটা ছেড়ে রাখা। শুরু হল বার্ট হান্সট্রার ‘জু’ দিয়ে। ছোট ছোট মুখগুলোতে অসাধারণ অভিব্যক্তি ফুটে উঠছে। চিড়িয়াখানায় আটক না-মানুষ বাসিন্দারা আর তাদের দেখতে আসা মানুষজন মিলেমিশে গেছে তাদের ব্যবহারিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে। বার্ট হান্সট্রা-র দ্বান্দ্বিক সম্পাদনা আর শব্দের অসাধারণ ব্যবহারে দর্শককে ভাবায় চিড়িয়াখানার পরিসর নিয়ে। মানুষ আর না-মানুষ, আদতে কে কাকে দেখছে? কে কাকে নকল করছে? ছোটরা খুব আনন্দের সাথে উপভোগ করল সিনেমাটি।

পরের সিনেমাটির পরিচালক অশ্বিন কুমার। ছবি ‘লিটল টেররিস্ট’। দেশ আর সময়ের ভেদাভেদ মিটে যায় মানবতায়। ছোট বাচ্চারা নিষ্পাপ হাতে হাততালি দিয়ে ওঠে যখন পাকিস্তানের ছোট্ট ছেলে জামাল খেলার বল কুড়োতে বর্ডার পেরিয়ে চলে আসে ভারতে কিন্তু শেষটায় সেনাবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পায় গ্রামের হিন্দু শিক্ষক আর তার মেয়ের সাহায্যে। সেই মানুষগুলোই কিন্তু প্রথমে পুরনো অভ্যেসের বশে ওই বাচ্চাটিকে সন্দেহ করেছিল, ধর্মের কারণে এক পাতে খেতে চায়নি।

সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘টু’ দেখতে দেখতে ছোটরা বলে উঠল যে বড়লোক বাচ্চাটি ওর দামি খেলনা দিয়ে বারবার গরীব বাচ্চাটিকে হারিয়ে দিলেও পরে বোকা বনে গেল। হঠাৎ দেখতে পেলাম দর্শকদের মধ্যে একটি ছোট ছেলে সামনে একটা ঢাক আর হাতে ঢাকের কাঠি নিয়ে ‘টু’ সিনেমাটি দেখছে ঠিক যেমন সিনেমাতে গরীব বাচ্চাটি ঢোল বাজায়।

এরপরে পর্দায় এল নর্ম্যান ম্যাকলেরেন আর ক্লড যুত্রা-র ছবি ‘এ চেয়ারি টেল’। এই ছবিটি তৈরি হয়েছে স্টপ মোশন টেকনিক দিয়ে। শব্দের ট্র্যাকে রবিশঙ্করের সেতার আর চতুর লালের তবলা। অ্যানিমেশন-এর মজা পাওয়ার সাথে সাথে তারা ‘শুধু একতরফা নেওয়া নয়, নিজেকেও কিছু ছাড়তে হয়’ বা ‘বন্ধুত্বের নির্ভরতা হয় উঁচু-নিচুতে নয়, সমানে-সমানে’ এমন কথাও বুঝল।
পরের ছবি নাগরাজ মঞ্জুলে-র ‘পিস্তুলিয়া’। ছবিটি দেখে ক্লাস টু-তে পড়া মিতা এসে বলল “জানো, ভাই চায় ওর বোন পড়াশোনা করুক, তাই জামাটা চুরি করল। ওদের তো পয়সা নেই…তাই…”। বেঁচে থাকার সংগ্রাম ওদের মনেও কেমন প্রভাব ফেলেছে বুঝলাম। পিস্তুলিয়ারা পৃথিবীর আলো–রোদ্দুর মেখে বেঁচে থাক।
এর পরে অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ওদের মনে ভাবনা উস্কে কিছু কথা সামনে আনতে দু’টি সিনেমার অংশবিশেষ দেখাই আমরা। ছবি দুটি হল পরশুরামের বিরিঞ্চিবাবা গল্প অবলম্বনে সত্যজিৎ রায়ের ‘মহাপুরুষ’ আর চ্যাপলিনের ‘সিটি লাইটস’ এর বক্সিং দৃশ্যটি। চ্যাপলিনের কাণ্ডকারখানা দেখে ছোট বড় নির্বিশেষে যা খুব প্রত্যাশিত তাই হল। আর আমরাও বেশ খুশি পেয়ারাবাগানের একমুঠো রোদ্দুর কে ছুঁতে চাওয়ার প্রচেষ্টায়।
-সুতপা ঘোষ।
‘Aunty, the last time you had come you had shown us so many films. You’ll show us films this time also?’
We were greeted with smiles and hugs at Peyarabagan on Beltala Road. Many of the children remembered the films we had shown the last time we were there, which was so heartening, given that six months had passed!
After everyone had settled down, which was a task in itself because there were more than a 150 children, we played a short game. The children had to imitate each action I did. I tried actions that were similar to those in the short film Zoo, by Bert Haanstra, since it was the first film we were going to show. So there was yawning, stretching, scratching and so on.
Following Zoo, and a short discussion on who was imitating whom (some children said the humans were imitating the animals, some said it was vice versa), we screened Little Terrorist, directed by Ashvin Kumar. This short film tells the story of a boy who inadvertently crosses over from Pakistan into India and how the family who rescues him shaves his head, leaving only a tuft of hair—signifying that he is Hindu—thereby protecting him from the border police. The children were engrossed, some whispering: ‘Will they shoot the boy?’.
Most of them immediately understood that the reason why the hair was cut was religion—and how physical appearance was taken as an indicator of religion. What amazed me was how the children immediately identified the mines in the sand—but I suppose children are exposed to so much these days!
AfterLittle Terrorist, we screened Two by Satyajit Ray. This film shows a game of one-upmanship between a well-to-do boy and a boy living in a shack.
‘ Aunty, the rich boy was feeling jealous of the poor boy. He wanted to show that he had nicer toys.’
‘ In the end, it didn’t serve any purpose. Kono laabh holo na.’
The next film was A Chairy Tale by Norman McLaren and Claude Jutra. ‘ Have you ever tried to sit on a chair and the chair didn’t let you?’, I asked the children. No, they said in unison, looking at me quizzically. This film shows, through stop motion animation, a situation where a man wants to sits on a chair, but the chair simply won’t let him. After various attempts, the chair only lets him sit on it, after it sits on him.
Next on the list was Pistulya, a film by Nagraj Manjule. I explained the story to the children before we started the film as it is in Marathi. I think the children were able to relate to the film, comprehending immediately that the boy stole the uniform for his sister, so that atleast she would be able to attend school, even if he wasn’t able to. They even related the film to Chanda ke Jootey, which we had shown them before.
After this, we screened a brief segment from Mahapurush and the boxing scene from Charlie Chaplin’s City Lights. Both these highlight belief in superstitions. After the segment from Mahapurush, I asked the children what they thought. Many said that perhaps the Baba shown in the film was fake. Some said that they knew people who believed in holy men. I think that this is a discussion that needs to be continued. Children should be able to think critically about whether those who claim to do magic and claim to be holy men are really to be believed or not. I hope that showing these films has sowed the seed of thought.
The children at Peyarabagan are a wonderfully intelligent lot. This is the second time that Civilian Welfare Foundation, who run a school in the neighbourhood, has invited us and each time I wonder at the responses we get.
Report: Paroma Sengupta
Photos: Kunal Chakraborty
Peyarabagan basti
15 October 2017